উত্তরনের পথে কেরালা

 কেরালা-৪
নর্থইস্ট-১
গুয়াহাটি ইন্দিরাগান্ধি স্টেডিয়াম দেখল ঘুরে দাঁড়ানো কাকে বলে। দিনের শুরু দেখে যেমন বোঝা যায় সারাদিন কেমন যাবে, সেই ভাবেই ম্যাচের শুরুতে ধারনা করা যাচ্ছিল কি হতে পারে। একদলের লক্ষ্য তালিকার শীর্ষে পৌছনো, আরেকদল তালিকার শেষ থেকে কিছুটা উপরে ওঠা। অবিশ্বাস্য ভাবে ২৭ সেকেন্ডের মাথায় জার্মানের পাস থেকে গোল করেন ডগনাল। শুধুমাত্র প্রথম গোল নয়, সবথেকে দ্রততম গোল করে এগিয়ে দেয় কেরালাকে। নর্থইস্টকে কিছুটা ধরাশায়ী করেই জয় ছিনিয়ে নেয় কেরালা। ৯০ মিনিটের মাথায় ভেলেয এর গোল আসলেও তা সান্ত্বনা পুরুস্কার হিসেবেই রয়ে গেল সিজার ফেরিয়াসের দলে।
ম্যাচের প্রথম থেকেই কেরালার মধ্যে ছিল জয়ের নেশা। আর যখন কোন দল খেলা শুরুর প্রথমেই গোল করতে পারে সঙ্গে সঙ্গে আসে বাড়তি উদ্যম। কেরালার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। প্রথমেই নাটকীয় ভাবে গোল আসে ডগনালের পা থেকে। তার কিছু পরেই আসে কেভিন লোবোর গোল। বলতেই হয় অসাধারণ একটা গোলের সাক্ষী রইল দর্শক। ভারতীয় ফুটবলারও যে বিদেশী ফুটবলারদের সঙ্গে টক্কর দিতে পারে তা আবার প্রমানিত। আজ মেহেতাব এর চোট কিছুটা চিন্তিত করেছিল দলকে। তবে লোবো, পুলগার দারুন কম্বিনেশন মেহেতাব কে কিছুটা নিশ্চিন্ত নিশ্চয় করেছিল। সৌমিক দের খেলায় চিল অভিজ্ঞতার ছোঁয়া।  দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুটি গোল আসে জার্মান ও ডাগনালের পা থেকে। গোল সংখ্যা কেরালার আরও কিছু বাড়তেই পারত। হসু গোল না পেলেও বেশকিছু চেষ্টা তার দিক থেকে দেখা গেছে। ডগনালের শেষ গোলের কথা বলতেই হয়। অনেকটা পথ একা দৌড়ে এসে যে ফিনিশটা করল তা এককথায় অসাধারণ। বাইয়াটার আজ দারুন খেলেছেন। বুঝিয়ে দিয়েছেন কেন কোচ তার উপর ভরসা করেন।
নর্থইস্ট চেষ্টা করলেও কাজের কাজটা করতে পেরেছেন একমাত্র ভেলেয। সিজার ফেরিয়াসের দলকে হতাশ, অবিন্যস্ত লেগেছে। তার কারন তাদের পারফর্মেন্স।  অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস, ম্যান অয়াচিংএ ব্যস্ত থাকা এই সবকিছুর প্রভাব পরেছে ফলাফলএ। আজ সিজার ৭টি পরিবর্তন নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু তার ভরসা কেউ রাখতে পারেননি। বেশ কিছু আক্রমন আসলেও তা গোল এ পরিবর্তিত হচ্ছিল না। বেশ কিছু সময় ধরে দেখা গেছে নিকো ভেলেয আক্রমন তৈরি করছেন। কিন্তু ভেলেয যদি আক্রমন তৈরি করেন তাহলে গোল করবে কে! অ্যাটাকিং থার্ডে একা হয়ে যাচ্ছিলেন ভেলেয। কামারা আসলেও লাভ হয়নি দলের। সঞ্জু প্রধান ভাল চেষ্টা করেছেন। আগের ম্যাচে রেহেনেশকে দারুন ভাবে জ্বলে উঠতে দেখা গিয়েছিল। কিন্তু আজ একের পর এক গোল খেয়ে রেহেনেশ হতাশ। বোঝা যাচ্ছিল তার শরীরী ভাষায়। দলের ডিফেন্স বেশ নড়বরে ছিল। আর তার মাশুল দিতে হল ৪-১ ফলাফলে।
প্রতিকুলতার সঙ্গে লড়াই করে ফিরেছে কেরালা। কোচ আগেই বলেছিলেন তিনি এখন বেশি দূর দেখতে চান না। একটা একটা ম্যাচ ভেবে এগোতে চান। সেটাই বোধহয় দলের প্লাস পয়েন্ট হিসেবে কাজে লেগেছে। আজ ম্যাচ জুড়ে ছিল উত্তাপ। তা কিছুটা ফুটবলার দের মধ্যেও লক্ষ্য করা যায়। হলুদ কার্ড দেখেন রামাজে, সৌমিক, হাঙ্ঘাল, ডাগনালও।  হিরো অব দি ম্যাচ কেভিন লোবো। তবে এই সম্মানের সমান দাবিদার ডগনালও। রবিবারের এই ম্যাচের পর নর্থইস্ট রইল চার এ, কেরালা উঠে এল তালিকার ৭ নম্বরে। কলকাতা এখনও চার এ।

90 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


*