ভারতের নতুন ইতিহাসের সাক্ষি মাত্র ১০ হাজার

এই সেই মোহনবাগান যাকে নিয়ে চায়ের কাপে চুমুক দেয় কলেজের ক্যান্টিন, পাড়ার মোড়ে আড্ডা, শুরু হয় সেই তর্ক, আবেগ। এই সেই মোহনবাগান যাকে ঘিরে হাজারও স্বপ্ন। এই সেই মোহনবাগান যার জন্য আই লিগের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আশায় ৪০-৫০ হাজার মানুষ পাড়ি দিয়েছিল এই শহর ছেড়ে অন্য শহর। আজ সেই মোহনবাগান যখন দেশের পতাকা উড়িয়ে এগিয়ে যেতে চলেছে সামনের দিকে সেখানে দলের সুখ দুঃখের অংশীদার মাত্র ১০ হাজার। যেখানে নিজের দলকে জেতাবার জন্য কত জন কত রকমের বিশ্বাস মেনে চলেন।
শুধু মাত্র জমজমাট, আলোর রোশনাই, সেলিব্রেটি আর বাঙ্গাল-ঘটির ঐতিহ্যই আঁকড়ে থাকব। যেখানে আই-লিগ, ইন্ডিয়ান সুপার লিগের মত ম্যাচে মাঠ ভর্তি দর্শক। সেখানে আজ ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়ে নতুন ইতিহাসের পথে পা বাড়াল মোহনবাগান। সেই ইতিহাসের সাক্ষি রইল মাত্র ১০ হাজার। এ এফ সি কাপ খেলেছে অনেক দল ই কিন্তু এশিয়ান চাম্পিয়ান্স লিগ এ ভারতকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিল মোহনবাগান। পরের ম্যাচ চিনের সান্দং লুনেং তাইসং এফ সি। এবং অস্ট্রেলিয়ার একটি দল।
এ এফ সি কাপ খেলেছে ইস্টবেঙ্গল, পুনে, ব্যাঙ্গালোর কিন্তু এই চ্যম্পিয়ন্স লিগ এর আগে ভারত থেকে কেউ খেলেনি। এই রকম এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে সাক্ষী কেন মাত্র এই কজন? দল কি শুধুমাত্র মাঠের মাঝে থাকা ওই ১১ জন। তা তো নয়। “আমাদের রক্তে খেলা” এই কথাটা আমরা বিশ্বাস করি। যে ম্যাচে আমরা একটা দেশ সেখানে জেজে, কাতসুমি এরা একা কেন? বড় ম্যাচ থাকলে দেখা যায় ১ লক্ষের স্টেডিয়ামে ৬০ হাজার দর্শকের ঢোকার অনুমতি। আর এই ম্যাচে সেই তুলনায় প্রায় ফাঁকা। আই লিগে বেঙ্গালুরু এফ সি সঙ্গে মোহনবাগানের ম্যাচে ব্যাঙ্গালরে হাজির ছিলেন ৩০ হাজার দর্শক। সেখানে এই রকম এক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ যা কিনা নিজেদের ঘরের মাঠ কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে মাত্র ১০ হাজার! এটা ফুটবলের মক্কায় ঠিক মানানসই?
আমাদের উচিত এগিয়ে যাওয়া দলের সঙ্গে। ওরা একা নয়। জেজে, বালয়ান্ত, কাতসুমিরা শুধু নিজেদের জন্য খেলেন না। খেলেন দেশের জন্য। তাই মাঠ ভরা দর্শক শুধু মাত্র প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়াই আর ঝাঁ চকচকে ম্যাচ গুলোর জন্য নয়। দরকার সত্যি ভালবাসা। “আমরাই কখন মুখ কখনও দল কখনও দেশ।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


*