“প্রধান মন্ত্রীর গালে, জুতো মারো তালে তালে!” এই স্লোগান ছিল ছাত্র সংগঠনের মিছিলে। যেদিন প্রধানমন্ত্রী কলকাতা এয়ারপোর্টে নামলেন সেদিন কৈখালিতে ছাত্ররা তুমুল আন্দোলন করলো, সারা কলকাতায় আন্দোলন হলো। আমরা আপনারা সকলেই দেখেছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই রকম অসম্মানিত হওয়ার কারণ কি? তার দোষ কি? ওনার দোষ হলো #CAA মাধ্যমে হিন্দু বাঙালী উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়া। উদ্বাস্তু কি? হঠাৎ হিন্দু বাঙালী নামের পাশে উদ্বাস্তু কথাটি এলো কেন? জিন্না পাকিস্তান চেয়েছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হোল। গান্ধীজি দেশ ভাগকে সমর্থণ করেননি। ১৯৪৬ সালে দেশ ভাগের আগে জ্যোতি বসু ব্রিগেডে সুরাবর্দির সাথে আন্দোলন করলেন আগে পাকিস্তান স্বাধীন হবে তারপর ভারত সৃষ্টি হবে। পরিণামে: – জিন্নার নির্দেশে সুরাবর্দির নেতৃত্বে শুরু হলো Direct Action Plan. কি এই Direct Action Plan? অবিভক্ত বাঙলায় মুসলিম প্রধান অঞ্চলে কলকাতায় এবং নোয়াখালিতে হিন্দু নিধন। পুরুষদের হত্যা ও মহিলাদের ধর্ষণ করে খুন। ১৯৪৭ সালের ১৪ই আগস্ট বাঙলাদেশের খুলনা, ঢাকা, বরিশাল, ময়মনসিংহ, যশোর বা পদ্মা পাড়ের গ্রাম অঞ্চলে হঠাৎ করে বলে দেওয়া হলো এই দেশ তোমাদের নয়, তোমরা এখান থেকে চলে যাও। তাদের সেখানে জমি ছিল, পুকুর ছিল, গরু বাছুর ছিল। বাগানে আম, জাম , কাঁঠালের গাছ ছিল। হঠাৎ সব ত্যাগ করে তারা চলে এলো পশ্চিমবঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গের কোথায় তারা থাকলো? বনগাঁ, বারাসত, বসিরহাট, ডায়মণ্ডহারাবার, কাকদ্বীপ, নদীয়া, মুর্শিদাবাদ ও মালদহে। দেশ ভাগের এক মাসের মাথায় সেপ্টেম্বর মাসে গান্ধীজি নেহেরু কে বললেন পূর্ব পাকিস্তানের বর্তমানে বাংলাদেশ, থেকে যে সকল হিন্দু ও শিখরা ভারতে আসতে চাইবে, ভারত সরকার যেন তাদের অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করে। আধ পেটা, অর্ধনগ্ন অন্ন, বস্ত্রের কথাতো ছেড়ে দিন। তাদের বাসস্থানের জায়গা হলো, পশ্চিমবঙ্গের যে জায়গা গুলির নাম বললাম সেখানকার রিফিউজি ক্যাম্পে নয়তো রেললাইনের ধারে। জ্যোতি বাবু আবার স্লোগান দিলেন- “আসছে কারা? বাস্তু হারা।” এই বাস্তুহারাদের রেশন কার্ড দেওয়া হলো। তাদের ভোট ব্যাঙ্ক বানানো হলো। রেশন কার্ড দিয়ে আপনি সরকারের ভর্তূকির টাকায় সস্তায় খাবার পেতে পারেন, নাগরিকত্ব নয়। তাদের জমির পাট্টা দেওয়া হলো, অর্থাৎ তুমি জমিতে থাকতে পারবে, কিন্তু মালিক নও। দলিল দেওয়া হয়নি। এইরকমভাবে দীর্ঘদিন নিপীড়িত, বঞ্চিত হিন্দু বাঙালি উদ্বাস্তু। কংগ্রেসের দোষে দেশ ভাগের জন্য যে কষ্ট পেয়েছে। তারা বামফ্রন্টের ভোট ব্যাঙ্কে পরিণত হলো। ১৯৫০ সালে নেহেরু ও লিয়াকত চুক্তি হলো। পাকিস্তানে হিন্দুদের ও ভারতে মুসলিমদের যেন ধর্মের কারণে প্রান না যায়। ভারত সেই চুক্তি পালন করলো কিন্তু পাকিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে হিন্দু উদ্বাস্তুরা ভারতবর্ষে আসতে লাগলো। আজ ৭২ বছর পর নরেন্দ্র মোদী সেই সকল মানুষ যারা ভাগ্যের পরিহাসে দীর্ঘ দিন ধরে সামাজিক অনিশ্চতায় দু দুটো প্রজন্মকে নষ্ট করে ফেললেন, সেই মানুষদেরকে নাগরিকত্ব আইন দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। সেই কারণেই #CAA যার জন্য তৃণমূল এর চরম বিরোধীতা করছে। আপনি এর পক্ষে আসুন।

88 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*


*